Monday, June 15, 2020

রসগোল্লা –









Click,tag,button,internet,web - free image from needpix.com

Add caTP-Link TL-WN725N 150Mbps Wireless N Nano USB Adapter (Black)ption

কথাটি শুনে রহিমের মুখটি কেমন যেন মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেল। কিন্তু কিছু বুঝতে না দিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই হেসে দিয়ে বলল, ‘আমি একটু আগেই বাসা থেকে খেয়ে এসেছি’। ও বুঝতে দিতে না চাইলেও ওর চেহারা দেখেই আমি বুঝতে পারলাম ওর পকেটে হয়তো টাকা কম ছিল। টাকা নেই পকেটে তারপরেও একটি নয় দুটি বিরিয়ানি এনেছে। খুব মায়া হলো রহিমের জন্য। ভালোবাসায় হৃদয়টি ভরে গেল। মন চেয়েছিল বিরিয়ানির প্যাকেটটি খুলে নিজের হাত দিয়ে ওকে একটু খাইয়ে দেই। কিন্তু বাসার নিচে দাঁড়িয়ে খাওয়াতে গেলে কেউ দেখে ফেললে সমস্যা হবে। আম্মুতো ওর কথা জানে না তাই ওকে বাসায়ও আসতে বলতে পারলাম না। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে। কপালে কুয়াশার মতো কয়েকফোটা ঘাম জমে গেল। বাম হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে সেই ঘাম মুছতে মুছতে তাকিয়ে রইলাম রহিমের মুখের দিকে। রহিমও তাকিয়ে রইল আমার দিকে। দুজনের মায়াভরা চারটি চোখের মিলন কোনোভাবেই যেন বিচ্ছেদের সুর শুনতে চাচ্ছে না। কিন্তু চারদিকের পরিবেশ হাত নেড়ে বলছে, যে যার মতো বাসায় চলে যাও।  জীবনে মনে হয় কোনোদিন এত অসহায় লাগে নি। যেকোনো মুহুর্তে বাবা চলে আসতে পারে তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও রহিমকে বিদায় দিয়ে বাসায় ঢুকতে হলো।


ফেরার সময় বারবার পিছনের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম আমার বাবুটিও যেন যেতে চাচ্ছে না। তার চোখমুখ লাল হয়ে গেছে। জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আসলে রহিমকে বাবু বলে ডাকার অন্য একটি কারণ আছে তা পরে বলবো। বাসায় ঢুকে বারান্দায় গিয়ে আবার বাইরের দিকে তাকালাম দেখলাম রহিম এমনভাবে হাটছে যেন ১০৫ ডিগ্রী জ্বরে আক্রান্ত কোনো যুবক হেঁটে যাচ্ছে। রহিমের চেহারা এখন আর তেমন বুঝা যাচ্ছে না। হেঁটে হেঁটে যেন ভোরবেলার কুয়াশার মতো রাস্তার সাথে মিলিয়ে যাচ্ছে। তবে মাঝে মাঝেই আমাদের বাসার দিকে তাকায়। এসময় আমি আমার ডান হাতে একটু চুমু দিয়ে হাতটি রহিমের দিকে ছুড়ে দিলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম হাতের উপর কয়েকফোটা জল। এরমধ্যেই আম্মু রুমে এসে বলল, ‘তোর চোখে জল কেন’? আমিতো থতমত খেয়ে গেলাম। সাথে সাথে ওড়না দিয়ে চোখের জল মুছে একটি হাচি দিয়ে বললাম, ‘হাচি আসছিল আম্মু’। কিন্তু আমার বুবুটার জন্য বুকের মধ্যে কেমন যেন চিনচিন করছিল। পদ্মা মেঘনার ঢেউ যেন আছরে পরে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছিল আমার হৃদয়ের সকল অবয়ব।
প্রায় পাঁচ ছয় মাস পরে প্রিয়তি তার সেই বান্ধবী সাগরীকাকে বলল, ‘দোস্ত একটা কথা’। সাগরীকা বলল, ‘কি কথা বল’। প্রিয়তির মুখে মেঘের ভার, কপালে বিন্দু বিন্দু জল।  সাগরীকা প্রিয়তির মুখের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল আর মনে মনে বলল, ‘যেই প্রিয়তির সাথে দেখা হলে রহিমের কথা বলতে বলতে হাসিতে মেতে উঠত, আর আজ কি অসহায় তার চোখ, কি অসহায় তার মুখ’। সাগরীকা প্রিয়তিকে জিজ্ঞেস করলো, ‘কি রে তোর মন খারাপ কেন? তোর চেহারার এমন অবস্থা কেন’? এসময় প্রিয়তি সাগরীকাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। সাগরীকাও আর নিজের চোখের জল ধরে রাখতে পারলো না। এরপর সাগরীকা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে নিজের ওড়না দিয়ে প্রিয়তির চোখ মুখ মুছে দিয়ে বলল, ‘কি হয়েছে বল’। প্রিয়তি ভাঙ্গা কন্ঠে করুন সুরে বলল, ‘কিছু হয়নিরে সাগরীকা তবে অনেক কিছুই হয়ে গেছে, আজ আর তোর সহায়তা ছাড়া আমার মুক্তি নেই’। সাগরীকা বলল, ‘তোর সেই বাবুটা কই’? এই কথাটি প্রিয়তির বুকের মধ্যে যেন তিরের মতো বিদ্ধ হলো। প্রিয়তির ঠোঁট কাঁপছে। কিছু বলতে চায় কিন্তু আবার ফিরিয়ে নেয়। এরপর অনেক কষ্টে মুখ খুলল প্রিয়তি, ‘তুই বুজি আজ আমাকে কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছিস’। সাগরীকা বলল, ‘এই কথা কেন বলছিস? এতদিন তো আমাদের একটু সময়ও দিতি না। ক্লাশ শেষ না হতেই বাবুকে নিয়ে বের হয়ে যেতি। আগেতো বাসায় গিয়েও অনেক ফোন দিতি। বলতে পারবি তিন চার মাসের মধ্যে ভুলেও একবার আমাকে ফোন দিয়েছিস’? সাগরীকার কথায় প্রিয়তির বুকটি যেন ঝাজড়া হয়ে রক্ত বের হয়ে যাচ্ছে। সাথে প্রিয়তির পেটের মধ্যে জন্ম নেওয়া তিন চার মাসের ভ্রুনটিও যেন বের হয়ে যেতে চাচ্ছে।  প্রিয়তি মনে মনে বলছে, ‘বের হয়ে যাক পেটের মধ্যে থেকে, তাহলে সকল আপদ মুক্ত হতো’। প্রিয়তির চোখে আবার ঝর্নার মতো জল দেখে সাগরীকা নিজের ভুল বুঝতে পেরে বলল, ‘সরি দোস্ত আসলে আমি বুঝতে পারিনি তোর মনে এত কষ্ট। আমাকে ক্ষমা করে দিস।  কি হয়েছে তোর, আমাকে সব খুলে বল’।

প্রিয়তি কাপাকাপা কন্ঠে বলল, ‘আমাকে একজন গাইনি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবি? আমার খুব লজ্জা করছেরে সাগরীকা, তুই আর আমাকে লজ্জা দিছ না’। এই বলে প্রিয়তি তার সামান্য উঁচু হওয়া পেটটিতে হাত দিয়ে দেখালো। সাগরীকার আর কিছু বুঝতে বাকি রইল না। শুধু মনে মনে বলল, ‘আহারে প্রিয়তির সেই আদরের বাবুটিও আজ বাবুর বাবা হতে চলছে’। এরপর সাগরীকা প্রিয়তিকে বলল, ‘তোর সেই বাবুটিকেও ডাক একসাথে যাই ডাক্তারের কাছে’। প্রিয়তি একটি দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল, ‘তুই আর বাবু বাবু ডেকে আমাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিছ না। বাবু এখন আর বাবু নেই। আমাকে একটি বাবু দিয়ে সে চলে গিয়েছে। সে এখন অনেক বড় হয়ে গেছে। তাকে এখন বাবু ডাকলে অপমান করা হবে। এখন অন্য কেউ তাকে বাবু ডাকে না, বর বলে ডাকে। আর সে এত তাড়াতাড়ি বর না হলেও বাবু বাবু ডাকার মতো নারীর এখন কি তার অভাব আছে’? সাগরিকা বলল, ‘আর তুই’? প্রিয়তি বাম হাত দিয়ে চোখের জল মুছছে আর ডান হাত সেই উচু পেটে রেখে বলল, ‘আমি এখন আর আমার বুকের সন্তানকে নষ্ট করবো না। আমি এই বুকের সন্তানকে নিয়েই স্বপ্ন দেখবো। ওকেই আমি বাবু বাবু ডেকে জীবনটা পাড় করে দেবো। এটাই আমার সান্ত্বনা’।

সাগরীকা প্রিয়তির কথা যতই শুনছে ততই অবাক হয়ে হচ্ছে। কিছুক্ষন নীরব থেকে বলল, ‘তোর আসল বাবুরই খবর নেই আর এই নতুন বাবুকে বুকে নিয়ে কি কলঙ্কের ভার আরো ভারী করতে চাস? সাগরীকার কথায় প্রিয়তির লাল চোখ আরো লাল হতে লাগল। রক্তাক্ত চোখেই সাগরীকার দিকে তাকিয়ে প্রিয়তি বলল, ‘এটা আমার ভালোবাসার ফসল, ভালোবাসার ক্ষেত্রে কলঙ্ক বলতে কিছু নেই। আর কলঙ্ক যদি হয়েই থাকে হোক তাতে কি আমি এই কলঙ্ক মাথায় নিয়েই বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে চাই। আমি যে জীবনে কাউকে ভালোবেসছিলাম, কারো কাছে ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছিলাম তার একটু স্মৃতি বা চিহ্ন হলেও থাক আমার বুকে। স্মৃতির মাঝেতো একটু ক্ষত থাকবেই।
night, couple, romance, love, silhouette, romantic, set, human ...
সাগরীকা প্রিয়তিকে অনেক বোঝালো তারপর প্রিয়তি রাজী হলো অনাগত সন্তানটি এবরশন করার জন্য। এর কয়েকমাস পর নিউজ পেপারে একটি হেডলাইন হলো, “রাস্তার উপর ব্যাগে মোড়ানো জীবন্ত শিশু”। খবরটি মুহূর্তের মধ্যেই ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেল। সেই নীল পাঞ্জাবীওয়ালা বাবুটিও খবরটি তার নিজ আইডিতে শেয়ার করে লিখলো, ‘কিয়ামত খুবই সামনে চলে আসছে’। তার এই স্ট্যাটাস দেখে প্রিয়তীর বান্ধবী সাগরীকা হাহা রিএ্যাক্ট দিলো। কিন্তু নীল পাঞ্জাবীওয়ালা বাবুটি কিছুই বুঝতে পারলো না। আর প্রিয়তি তো তার সেই প্রিয় বাবুটির ব্লক লিস্টেই আছে। সাগরীকা প্রিয়তিকে নীল পাঞ্জাবীওয়ালার স্ট্যাটাস স্কীনসট দিয়ে দেখালো। প্রিয়তি স্কীনসট দেখে চোখে একফোটা জলও আনলো না। শুধু তাকিয়ে রইল স্কীনসটের উপরে গোলাকার ছোট্ট একটি ছবির (প্রোফাইল পিকচার) উপর। এই সেই নীল পাঞ্জাবীপড়া ছবি যা দেখে সে বাবুটিকে নিজের বর হিসেবেই ভেবে নিয়েছিল। এসময় প্রিয়তিও তার প্রোফাইলে লাল শাড়ি পড়া ছবিটি দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল।








No comments:

Post a Comment

PLZ FOLLOW GUY LETEST UPDATE

সবকিছু নিয়েই রাজনীতি করব, দম থাকলে আটকান', মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ দিলীপ ঘোষের

সবকিছু নিয়েই রাজনীতি করব, দম থাকলে আটকান', মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ দিলীপ ঘোষের পুরুলিয়ায় এক দলীয় কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “আমরা হরি...